• শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:৪৯ অপরাহ্ন
শিরোনাম
গাজীপুরে ডিবি পরিচয়ে ৯৮ লাখ টাকা ডাকাতি, ‘গণমাধ্যমে না জানানোর অনুরোধ পুলিশের’ মাছ না পেয়ে ছিপে কামড় স্কুলছাত্রীকে উদ্ধারে পরিবারের আকুতি উখিয়ায় রুমখাঁ মাদ্রাসার সাবেক সিনির শিক্ষক প্রবীণ আলেমেদ্বীন মাওলানা মোজাহেরুল ইসলাম আর নেই অবশেষে প্রবেশপত্র বঞ্চিত ১৩ শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ পেলো বাংলার শব্দচাষীর উপদেষ্টা হলেন যাঁরা সাব-রেজিস্টার প্রদীপের ঘুষ দুর্নীতির অনুসন্ধানে বাংলা পত্রিকা পাইকগাছা উপজেলা প্রশাসনের নববর্ষ উদযাপন পাইকগাছায় আমের গুটিতে দুলছে স্বপ্ন ভরা চাষীর চোখ সঙ্কটপ্রবণ অঞ্চলে ১৬ বছর ধরে নিরাপদ পানি সরবরাহ করে যাচ্ছে ‘প্রবাহ’

স্কুলছাত্রীকে উদ্ধারে পরিবারের আকুতি

গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধিঃ  / ৬ পাঠক
আপডেট মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল, ২০২৫
গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধিঃ

গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধিঃ
 গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার শোভাগঞ্জ কলেজমোড় থেকে অপহরণের শিকার স্কুলছাত্রী ২ মাসেও উদ্ধার হয়নি। অপহৃতাকে দ্রুত উদ্ধারে প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ে পরিবারের আকুতি অব্যাহত রয়েছে।
 জানা যায়, গত ১৬ ফেব্রুয়ারী সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টায় পরিকল্পিত অপহরণের শিকার শোভাগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণীর ছাত্রী (১৩)। ঘটনার ২ মাস পূর্তি হলেও জড়িতদেরকে গ্রেপ্তার না করে উল্টো অভয় দেয়ায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) এসআই আবু সাঈদকে পরিবর্তনেরও দাবী করছে পরিবারটি। ঘটনার পর ১৯ ফেব্রুয়ারী অপহৃতার পিতা বাদী হয়ে সংশ্লিষ্ট আইনে থানায় মামলা করেন। তাৎক্ষণিক সম্পূরক তথ্য না পাওয়ায় ৫ জনের নাম উল্লেখপূর্বক অজ্ঞাত মিশুক/অটোবাইক ও চালকসহ অজ্ঞাতনামা আসামী ৩-৪ জনকে আসামী করা হয়েছে। পরবর্তীতে নির্ভরশীল তথ্যেপ্রাপ্ত অপহরণকালে জড়িত থেকে যারা জোড়পূর্বক স্কুলছাত্রীকে গাড়িতে তুলে নিয়ে অপহরণ করেন। তাদেরকে আসামীতে অন্তর্ভূক্ত করারও দাবী জানান মামলার বাদী।অপহরণকারীরা হলো- উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ সমস গ্রামের আনিছুর রহমানের ছেলে শাকিল মিয়া (১৮), জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে হামিদুল ইসলাম (১৯), সঞ্জু মিয়ার ছেলে মেহেদী হাসান (১৯), সোলায়মানের ছেলে আব্দুল ওয়াহাব (২২), আব্দুলের ছেলে মোমিন মিয়া (১৮), আলমগীরের ছেলে মাহিদ ইসলাম (১৭), মোস্তফার ছেলে ফারুক মিয়া (১৮), আঃ মতিনের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম (৫৫) ও মজিবর রহমান ছেলে মিশুক/অটোবাইক চালক খোরশেদ আলম। আর পরাকল্পিত অপহরণে যারা ফাঁকি দিয়ে ডেকে নিয়ে গিয়ে অপহরণকারীদের কাছে পৌঁছে দেয়। এরা হলো- একই স্কুলের ছাত্রী অপহৃতার প্রতিবেশী আসামী রনজিনা আক্তার ওরফে আর্জিনাসহ আরো ৩-৪ জন। এছাড়া, অপহরণের পর স্কুলছাত্রীকে যারা জোরপূর্বক আটকে রেখে গাইবান্ধা শহরের বিভিন্ন বাসায়, নদীর চরাঞ্চল, নওগাঁ, জয়পুরহাট, ঢাকায় নিয়ে চলাফেরা করছে। আর যাদেরকে গ্রেপ্তারে সহজেই অপহৃতাকে উদ্ধার, সংশ্লিষ্ট ঘটনাবহুল তথ্যভিত্তিক রহস্য উম্মোচন সম্ভব। তারা হলো- দক্ষিণ সমস গ্রামের আঃ কাদেরের ছেলে সোলায়মান মিয়া (৫৫), সঞ্জু মিয়া (৫২), আঃ মতিনের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম (৫৫), সোলায়মানের ছেলে আঃ আহাদ (২৪), সিদ্দিক মিয়ার ছেলে মাইদুল ইসলাম (৩০), আঃ রহিম ওরফে আব্দুলের ছেলে আঃ মোত্তালেব (১৬), আনিছুরের ছেলে শাকিল মিয়া ও উত্তর মরুয়াদহ গ্রামের রঞ্জু মিয়ার মেয়ে রনজিনা ওরফে আর্জিনা আক্তার।

আর্জিনা আক্তার রনজিনা

 এদিকে, অপহরণের পর গত ঈদ-উল ফিতরের দিন (২ এপ্রিল) বিকালে ০১৭৭৭২১০৭১০ মোবাইল নম্বর থেকে অপহৃতা তার বাবার নম্বরে কল করে কান্না বিজড়িত কন্ঠে বলে- ‘আস-সালামু আলাইকুম। আব্বু তুমি কেমন আছো! তুমি মামলা করেছো জন্যে এরা আমাকে বাড়িতে যেতে দেয়না, মামলা তুলে নিলে আমাকে বাড়িতে যেতে দিবে। আমাকে কোন জায়গায় নিয়ে আসছে, তা জানিনা। এটা অন্য মানুষের ফোন। আমার তো কোন ফোন নাই’। এসব কথা বলতে না বলতেই একটু জোড়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ার মত অবস্থা উপলব্ধি হয়। এসময় পাশ থেকে দুইয়ের অধিক কন্ঠ শুনে পরিলক্ষিত হয় অপহৃতার পাশে ৩-৪ জন রয়েছে। এরা সবাই তাদের ইচ্ছামত কিছু বলতে বাধ্য করলেও তাদের কথামত বলতে না পারায় মোবাইলফোনটি মেয়ের হাত ছাড়া করে নেয়ারমত উপলব্ধি করতে পারেন তার বাবা ও বড় বোন। পরে ঐ নম্বরে কল করলে পরিচয় মেলে। নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার পাহাড়পুর ইউনিয়নের পাহাড়পুর বাজারস্থ একটি খাবারের হোটেল মালিক রাকিবুল হাসানের মোবাইলফোন থেকে কল করে হোটেল মালিকের অগোচড়ে থেকে এসব কথা বলাতে বাধ্য করছে অপহরণকারী চক্রের সদস্যরা।
  হোটেল মালিক জানান, অপর এক মেয়েসহ ৪-৫ জনে যে মেয়েকে ফোনকলে কথা বলায়, সে মেয়েটি কম বয়সী, বোরখা ও মাস্ক পরিহিতা। এরপর থেকে তারা আর এ দোকানে আসেনি।
 অপহরণের পর অস্বীকার করার চেষ্টা করলে স্থানীয়রা রনজিনার মোবাইলফোন থেকে কিছু তথ্যচিত্র সংগ্রহের পর একটু-আধটু মুখ খোলে। সে অনুযায়ী অপহরণকারী চক্র মেয়েকে ফিরে দিতে চেয়ে প্রতারণা করে। এ ঘটনায় অপহৃতার বাবা বাদী হয়ে ৫ জনের নাম উল্লেখপূর্বক অজ্ঞাতনামা আরো কয়েকজনকে আসামী করে সংশ্লিষ্ট আইনে থানায় মামলা করেন। বাদী আরো জানান, মামলার আইও (তদন্তকারী কর্মকর্তা) এসআই আবু সাঈদ আসামী রনজিনাকে বাড়িতেই রেখে ফিরে গেছেন। তাছাড়া, গ্রহণ করতে না চাওয়ায় আসামী মাহিদের কাছ থেকে ফিরে যেতে হয়েছে প্রশাসনের অন্য একটি বিভাগের সদস্যদেরকে। এরআগে অপহরণকারীরা একই স্কুলের ছাত্রী রনজিনাসহ দীর্ঘ প্রতিপক্ষ একটি পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মোবাইলফোন, ইমো, ম্যাসেঞ্জারসহ বিভিন্ন মাধ্যমে ব্যাপক যোগাযোগের যোগসূত্র জানতে পান স্থানীয়রা। প্রতিপক্ষের পরিবারের পরিকল্পনায় ঘরে পড়ার টেবিল থেকে রনজিনা তার ছোট ভাই মিলে ফাঁকি দিয়ে স্কুলছাত্রীকে বাইরে বের করে। সেখানে অপেক্ষমান প্রতিপক্ষ পরিবারের কতিপয় সদস্য মিলে স্কুলছাত্রীকে কলেজ মোড়স্থ মিনি-বিশ্বরোডে ডেকে আনলে অপহরণকারীরা এ ঘটনা ঘটাতে সক্ষম হয়। তাঁর মেয়েকে বিভিন্ন কাগজে সহি-স্বাক্ষর, গণমাধ্যমকর্মী ও মানবাধিকারকর্মীকে ডেকে স্থির ও ভিডিওচিত্র ধারণ এমনকি তারা নিজেরাও মোবাইলফোনে এসব চিত্র ধারণ করেছে। এতে মেয়ে কোনভাবেই সম্মতি না দেয়ায় তাকে শারিরীকভাবে নির্যাতন করেছে। মেয়েকে ফিরিয়ে দেয়ার কথা বলে বিভিন্ন মাধ্যমে মুক্তিপণ দাবী করলেও এখন মুক্তিপণ হিসেবে দাবী করছে মামলা তুলে নেয়ার। অপহরণকারীরা অপহৃতার নামীয় প্রায় অর্ধকোটি টাকা মূল্যের জায়গাজমি হস্তগত করতে অপহৃতার বাবার পরিবারের প্রতিপক্ষের সঙ্গে পরিকল্পিতভাবে এ ঘটনার সূত্রপাত ঘটিয়েছে বলে জানতে পান বাদী ও তার পরিবার। তারা দাবী করেন- অতিসত্বর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) পরিবর্তন করে অপহৃতাকে উদ্ধার, আসামীদেরকে গ্রেপ্তারের। তারা বলেন- এপর্যন্ত উদ্ধার ও গ্রেপ্তার না করায় মামলার ভবিষ্যত অনিশ্চিয়তার দিকে যাচ্ছে।
 মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আবু সাঈদ বলেন, কাউকে পাওয়া যাচ্ছেনা।
 থানা অফিসার ইনচার্জ আব্দুল হাকিম আজাদ বলেন, অপহৃতাকে উদ্ধার ও আসামী গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে।
 জেলা পুলিশ সুপার নিশাত এ্যাঞ্জেলা বলেন, অপহৃতা উদ্ধারসহ জড়িতদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে।
আবু বক্কর সিদ্দিক
জেলা প্রতিনিধি
গাইবান্ধা।
০১৭৩৮৪২৯৪১৮/০১৭৫১৪৪৪৭২৮।


আপনার মতামত লিখুন :
এই বিভাগের আরোও