শাকুর মাহমুদ চৌধুরী
কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার হলদিয়া পালং আদর্শ বিদ্যাপীঠের ১৩ জন এসএসসি পরীক্ষার্থী, যারা সিন্ডিকেটের চক্রান্তের কারণে চলমান পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি, অবশেষে ইংরেজি প্রথমপত্র পরীক্ষায় বসার সুযোগ পাচ্ছে। তাদের এ যাত্রা ছিল এক বেদনাদায়ক অধ্যায়, তবে স্থানীয় প্রশাসন, সাংবাদিক ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোড়নের ফলে শিক্ষার্থীরা আবারও স্বপ্ন দেখার সুযোগ পেয়েছে।
উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কামরুল হোসেন চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, শিক্ষার্থীরা অসৎ চক্রের হাতে পড়ার কারণে এসএসসি পরীক্ষার প্রথম দিনে প্রবেশপত্র না পেয়ে পরীক্ষায় বসতে পারেনি। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ইউনুসকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
তবে উপজেলা প্রশাসন ও মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের হস্তক্ষেপে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আগামী মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) ইংরেজি প্রথমপত্র পরীক্ষায় তারা অংশ নিতে পারবে বলে নিশ্চিত করেছেন ইউএনও।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক, শিক্ষক ও অভিভাবকরা জানান, বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়। শিক্ষার্থীদের কান্না, অভিভাবকদের আহাজারি এবং স্থানীয় ফেসবুক পেইজগুলোতে ভিডিও বার্তা ছড়িয়ে পড়লে তা সাড়া ফেলে। মিডিয়ার অব্যাহত প্রচারণা ও জনমত গঠনের ফলে ঊর্ধ্বতন মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ সম্ভব হয়।
রুমঁখা পালং উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুল আমিন জানান, শিক্ষার্থীদের নতুন করে প্রবেশপত্র সরবরাহ করা হয়েছে এবং তারা হলদিয়া পালং আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে।
এ ঘটনায় স্বস্তি প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা ও তাদের অভিভাবকরা। আনন্দ ও উত্তেজনায় ভরা চোখে এক শিক্ষার্থী জানায়, আমরা ভেবেছিলাম সব শেষ, কিন্তু আজ মনে হচ্ছে আমরা আবার ঘুরে দাঁড়াতে পারব।
এক অভিভাবক বলেন, আমার সন্তান যখন কাঁদছিল, আমি নিজেও ভেঙে পড়েছিলাম। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে আমাদের কষ্ট সার্থক হয়েছে।
এই ঘটনা শুধুই একটি প্রশাসনিক সফলতা নয়, বরং এটি সমাজের সম্মিলিত প্রয়াসের একটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। শিক্ষা জীবন থেকে একদম শুরুতেই একটি দুঃসহ অধ্যায়ের মুখোমুখি হওয়া এই ১৩ শিক্ষার্থীর কাছে এ সুযোগ যেন নতুন করে স্বপ্ন দেখার অনুপ্রেরণা।